সূর্য পৃথিবীর অন্ধ কথোপকথন
October 30, 2021
সূর্য পৃথিবী একে অন্যের পরিপূরক, একটি গল্পের ইতিকথা অথবা প্রথম মিলনের ঘনঘটা। প্রতিদিনের মত আজও সূর্যকে স্বপ্নে দেখে ঘুম ভেঙেছে, মিলনের বিষাদ প্রহরের অবসান হয়ে নতুন সূর্য নীল আকাশে উদিত হবার সম্ভাবনা। পৃথিবী আজ আলোকিত। তারপর থেকে শুরু মহাপরিকল্পনা। বিশ্বকে কিভাবে সাজানো যায়, তাদের হাতে সময় নেই, ব্যস্ত দুনিয়ার মানুষ গুলো তাদেরকে নিয়ে ঢাকঢোল পিটিয়ে বরণ করতে চাচ্ছে কিন্তু তাদের হাতে কোন সময় নেই, তারা পৃথিবীতে জন্মের স্বাদ পরিপূর্ণ করায় ব্যস্ত। নিদ্রাবিহীন কত রাত কেটেছে কেউ হিসেব রাখেনি। প্রতিদিন একই কথা এই সূর্য তুমি নিদ্রাবিহীন আর কতকাল কাটাবে। আপাতত ঘুমাও। চলছে লিখুনীর যাত্রা গন্তব্যে পৌঁছাতে হবে খুব শীঘ্রই। কিনারায় দাঁড়িয়ে সূর্য পৃথিবীতে আলিঙ্গন করে মিলনের ঘনঘটা রেশ পৃথিবীময় ছড়িয়ে দিতে প্রস্তুত। এখনও বলছি ঘুমাও, না সময় লাগবে অপেক্ষায় আছি কখন তুমি নির্দেশনা দিবে। ঘুমাও আস্তে আস্তে সব হাতের মুঠোয় চলে আসবে ইনশাআল্লাহ। স্রষ্টা আমাদের সাথে আছেন। তিনিই সর্বময় ক্ষমতার অধিপতি।স্রষ্টার সন্ধানে প্রার্থনারত প্রতিনিয়ত সূর্য পৃথিবী। সূর্য সুন্দর দৃষ্টিতে পৃথিবীটাকে সম্মান দিতে সদা গতিশীল, যত্নবান মানুষের মত ঘুর্নায়মান। অপেক্ষার ক্ষণ জানতে ব্যস্ত পৃথিবী? সূর্য বলছে না না তুমি বলো?পৃথিবী বলছে না না তুমি বল? নির্ধারিত সময় দন্ডায়মান, ষোল আনা বুঝতে অপারেশন ক্লিনহার্ট চলছে। পরীক্ষা শেষ এখন ফলাফলের স্বাদ নেওয়ার পালা। ঘুমাও… আমার সময় লাগবে গল্প লিখছি থেমে থেমে। তোমাকে শান্ত করে আবারও লিখছি। প্রতিদিন চলছে গবেষণার ফসল ঘরে তুলার পরিকল্পনা। দু’জনের সিদ্ধান্ত নিজেরাই ফসল তুলবে কিন্তু কোলাহল মুখর দুনিয়ায় পদার্পণ করতে কিছু্ একটা করতে হবে ইহাই বাস্তবতা। সূর্য আলো দিতে প্রস্তুত পৃথিবীও সূর্যকে বরণ করতে প্রস্তুত। দিন ক্ষন মূহুর্ত ঠিকঠাক। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের ইশারায় স্রষ্টার কৃপায় দুটি হৃদয়ের গহ্বরে লোকায়িত আলোক শিখা জ্বলে উঠলো পৃথিবীময়। স্রষ্টার সৃষ্টি মানুষদ্বয় একটি আত্মায় রুপান্তরিত হয়ে মিলনের জোয়ারে ভাসছে।আজিকে সাত সাগর তের নদী পাড়ি জমিয়ে জীবনের জয়গান। সূচনা পর্ব শুরু করে সূর্য পৃথিবীকে বরন করতে ব্যস্ত। পৃথিবী আজ আলোকিত, সূর্য তার হৃদয়ের সকল সফলতা পূর্ণ করে আস্থার বাতিঘরে নির্মিত মহাশক্তি মহাবিশ্বের। দুর্গপ্রাচীর সামনে , ইতিবাচক চিন্তায় তাদের চোখ শুধুই সামনে, পেছনে তাকানোর অবকাশ নেই। এদেশ আমার এদেশ তোমার, ঐক্যের বন্ধনে গড়ে তুলি সোনার বাংলা। সকলের মঙ্গল কামনা এবং ইহাই শক্তি ।
লেখক : মোহাম্মদ রেজাউল করিম
লিখিত : ১৪/১০/২০২১ সময় রাত- ৮:০০ টা
অন্ধ বিশ্বাসের বাতিঘর || The Light of Blind Trust
September 20, 2021
হঠাৎ ঘুম থেকে জেগে উঠেছি। জীবনের স্বপ্ন, জীবনের গল্প অথবা ছোট্র একটু কথা যা আকাশ থেকেও উঁচু। অন্ধ স্পর্শ কোন এক সারথির খুঁজে যখন স্বাস্থ্যের কার্ডিয়াক সার্জারি হয় তখন উৎফুল্ল পৃথিবী সুউচ্চ অন্তর আসনে বসিয়া খুঁজতে থাকে তার স্বাস্থ্যে গোলযোগ ঘটানো সেই সারথিকে। দু’চোখ বাঁধা কালো চশমা পরিহিত অবস্থায় গহিন জঙ্গলে অথবা বিশাল মহাসাগরে অথবা সাত আসমানের সুউচ্চ অট্টালিকায় সারথির মিলনের অপেক্ষার প্রহর গুনতে থাকে অন্ধ মানুষটি। সেই বিষাক্ত প্রহর ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আঘাত আনতে থাকে হৃদয়ের গহীন গহ্বরে। তন্ত্রের কুন্ডুলিকায় কবে শেষ হবে সেই প্রহর?
পৃথিবীটা অনেক ছোট এবং বিশ্ব পরিমন্ডলে পৃথিবীর মানুষ গুলো অনেক বড়। মানুষ গুলোর হৃদয়ের সীমানা প্রজ্জ্বলিত আলোর বাতিঘর, যে বাতি পৃথিবীতে আলো ছড়ায়। ইহা একটি গল্প, জীবনের গল্প অথবা কোন ঠিকানা অথবা জীবনের সঠিক গন্থব্য। কেউ যদি ডাকে সারা পেয়ে আহ্বানের সঠিক জবাব দেয় তবেই পৃথিবীটা আলোর ঝলসানিতে ভরে উঠবে। নতুবা গহীন অন্ধকারে নিমজ্জ্বিত মানুষ গুলো অসহায় রয়ে যাবে পূর্ণ হবে না আশার বাতিঘর।জেগে উঠুক তোমাদের রণতরী,পৃথিবীর মানুষ গুলো ঢেউয়ের তরঙ্গোচ্ছ্বাসে ভেসে মহাসাগর পাড়ি দিয়ে কিনারায় ভিড়তে চলেছে অথবা মহাকাশের সর্বোচ্চ চূঁড়ায় ছুঁতে চলেছে। তোমরা পূর্ণতাকে সম্মান দিয়ে মহামিলনের পথে হাঁটতে শুরু করো, ভালোকে ভালো বলতে জানা একটি মহত্বের লক্ষণ। মনে রাখবা সাদাকে সাদা এবং কালোকে কালো বলতে কোন ভয় পাবে না।জন্ম মৃত্যু স্রষ্টার হাতে।স্রষ্টার ইশারায় সকল কিছু প্রতিনিয়ত পরিচালিত হচ্ছে, বিশ্বাস রাখো তার উপর যিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন।
বাস্তব জীবন কঠোর যুদ্ধ, মহামারি, অকাল মৃত্যু মোকাবেলা করতে হয় প্রতিনিয়ত। সত্যকে মেনে নিয়ে বাস্তবতার বোঝা মাথায় নিতে অভ্যস্ত হতে হবে তবেই পৃথিবীটা অনেক সুন্দর মনে হবে নতুবা বারংবার হোঁচট খেয়ে সাত আসমান থেকে মাটিতে লুটিয়ে পড়তে হবে। আমরা বাঙালী, আমরা বীরের জাতি, কঠিন বাস্তবতা মোকাবেলা করতে আমরা অভ্যস্ত। নতুন প্রক্রিয়াকে বুঝে উঠতে বা নিয়ন্ত্রণ করতে খুব বেশি একটা সময় লাগে না।সময়ের ঘড়ির কাঁটা দিনদিন বয়েই চলেছে। বাস্তবতা,সময়কে এবং পৃথিবীকে হাতের মুঠোয় নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে নতুন ভোর নতুন পৃথিবী নতুন ঠিকানায়। নতুন বাস্তবতা মেনে নেওয়ায় জীবন, মানুষ মানুষের জন্য জীবন জীবনের জন্য।
আমরা সকলেই একে অন্যের এবং ইহাই হউক আমাদের প্রত্যয় ও বিশ্বাস। এই বিশ্বাস থেকেই গড়ে উঠবে আমাদের সোনার বাংলা। সোনার বাংলাই আমাদের স্বপ্ন, আমাদের গল্প এবং আমাদের পৃথিবী। আমাদের বিশ্বাস এই পৃথিবীতে গড়ে উঠবে নতুন এক নিলয় এবং আমরা বেঁচে থাকবো বিশ্ব পরিমন্ডলে অনন্তকাল।
লেখকঃ
মোহাম্মদ রেজাউল করিম
এডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট।
মোবাইল: ০১৭১৬১২৫৬৮৬
লিখিত : ১৯/০৯/২০২১, রবিবার সকাল ৮ টা।
অসহায় নগর চিন্তা
September 2, 2021
পৃথিবীর বুকে আমার দেশ ছোট্ট একটি ব-দ্বীপ। আমাদের অনেক সমস্যা রয়েছে, এত সমস্যা জর্জরিত হয়েও একটু ভালো থাকা, একটু মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর প্রয়াসে সকলেই আমরা চেষ্টা করছি। প্রতি নিয়ত হিসাবহীন প্রয়োজন মিটিয়ে তলা বিহীন জুড়ির মতো আবারো শূন্যের তালিকায় নাম উঠে যায় আমার দেশের। সবাই চেষ্টা করছি এই দেশটার চেহারা বদলিয়ে উন্নত বিশ্বের নাগরিক সুবিধা পাওয়ার আশায়, কিন্তু প্রতিটা সরকারের আমলে আমরা জনগণ হোচট খাচ্ছি ছোট বেলায় বানরের অংক কষার মতো, “এক ধাপ আমরা উঠি আবার আরেক ধাপ নেমে যায়” অথচ আমরা আমাদের চিন্তা চেতনা পরিবর্তনের চেষ্টা কেউই করি না। আমাদের ভালো কে ভালো বলার অভ্যাস নেই অথবা খারাপকে খারাপ বলারও সাহস নেই। একটা রাষ্ট্রের যদি সময় জ্ঞান না থাকে তাহলে তার মূল ধারার চাঁবিকাঠি কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাবে বৈকি। ছোট বেলায় পড়েছি “Time and tide wait for none” এখন প্রশ্ন হলো আমরা কি কখনও ভেবে দেখেছি প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ ঘন্টা যদি আমাদের রাস্তায় বসে কাঁটাতে হয় তাহলে কাজ করার কতটুকু সময় আমাদের হাতে থাকে? অথবা দৈনিক কার্য ক্ষমতাই বা কতটুকুই বাকি থাকে? ৬ ঘন্টায় ইচ্ছে করলে সিলেট অথবা দূরের কোন শহর ঘুরে আসা যায়। ধরা যাক উত্তরা থেকে একজন গুলিস্তান যাবে তাহলে তার যেতে ৩ ঘন্টা এবং আসতে ৩ ঘন্টা রাস্তায় বসে কাটাতে হবে ট্রাফিক জ্যামে। এই যদি হয় নগর জীবন, তাহলে আমরা কোন দুনিয়ায় বাস করছি? কিন্তু এতো বড় একটা নগর সমস্যা আমরা কেউ মেটানোর বিন্দু মাত্র চেষ্টা করিনি, প্রতিবছর শহরের মানবিক সুবিধা ঝরে পড়ছে, বাড়ছে অপরিকল্পিত বসবাসের চাপ, এক সময় দেখা যাবে ছোট্ট এই শহরটায় শুধু মানুষ আর মানুষ। এখনও সময় আছে হিসেবের খাতায় ট্রাফিক সমস্যা নগর জীবনের
একটি বড় সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে আমাদের মত ব্যস্ত মানুষ গুলোর মূল্যবান সময় গুলো অপচয় না করে জীবনকে উন্নত করা। এই সমস্যা এক দিনের না, দীর্ঘকালের পুঞ্জীভূত এই সমস্যা, কত সরকার এলোগেলো কারোই এই ব্যাপারে কোন মাথা ব্যাথা নেই, সরকার ইচ্ছে করলেই জনমত গঠন করে কিছু পদক্ষেপ নিলেই দ্রুত আমরা এই অভিশাপ থেকে মুক্তি লাভ করতে পারি। আমি জানিনা আমার এই লিখা দেশ পরিচালনার দায়িত্বে যারা আছেন তাদের নজরে পড়বে কিনা? তবুও ক্ষুদ্র চিন্তায় ট্রাফিক সমস্যার মতো এত বড়ো একটা সামাজিক ব্যাধির হাত থেকে পরিত্রানের দু চারটি পরামর্শ রাষ্ট্র পরিচালনার কর্ণধারদের দিতে চাই।
ছোট ছোট বিন্দু কণা থেকেই মহা সাগরের জন্ম হয়, আমার মতো এই রকম ছোট চিন্তা থেকেই হয়ত একদিন পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র গুলোর মতো অথবা ইউরোপের দেশগুলোর মতো মূহূর্তের মধ্যেই সময়ের কাজ সময়েই করা সম্ভব হবে অথবা কখনও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সময় অপচয়ের জবাবদিহি করতে হবে না অর্থাৎ সময় সঞ্চয়ের একটি খাত সৃষ্টি হবে। আমি জন্মের পর থেকে রিক্সা দেখে দেখে বড় হয়েছি। এই বাহনটি আমার কছে একটি অদ্ভূত বাহন হিসেবে মনে হয়, বিশ্বের কোথাও এই বাহনটি চোখে পড়ে না। ছোট বেলায় গরুর গাড়ী দেখেছি, ঘোড়ার গাড়ীও দেখেছি আর রিক্সা হচ্ছে কষ্টের একটি বাহন, এই বাহনটিকে আমরা কেন যে এখনও ধরে রেখেছি তা আমার মাথায় কাজ করে না। এটি মানুষ চালিত একটি বাহন, গরু অথবা ঘোড়ার মতো একজন মানুষ আরেকজন মানুষকে টাঁনছে, যখন দুপুর বেলায় খাঁ খাঁ রৌদ্র থাকে সেই রৌদ্রকে উপেক্ষা করে জীবনী শক্তি দিয়ে একজন রিক্সা ড্রাইভার জীবিকার নেশায় ঘাম ঝরাচ্ছেন আর অন্যজন মনের আনন্দে পায়ের উপর পা দিয়ে সুখ ভোগ করছেন। এত কিছু বলার অর্থ হচ্ছে আমরা এখনও রিক্সার বিকল্প অন্য কিছু কেন চিন্তা করিনা? এমন একটা বাহন কেনই বা গরীবের রুটি রুজির জন্য উৎসাহিত করি? তাদের কারো ড্রাইভিং লাইসেন্স নাই অথবা লাগে না ইচ্ছে মতো রাস্তায় এদিক সেদিক চালিয়ে বেড়ায়, পার্কিংয়ের জন্য নেই কোন শিক্ষা, ইচ্ছে মতো যত্র তত্র পার্কিং করে রাখে। আমি মনে করি এই ঢাকা শহরে ট্রাফিক সমস্যার জন্য অনেকাংশে রিক্সা দায়ী , যদি বিকল্প আয়ের উৎস সৃষ্টি করে রিক্সা উঠিয়ে দেওয়া যেতো তাহলে বিভিন্ন শহর থেকে ট্রাফিক জ্যাম অনেক কমে যেত।
আমাদের ট্রাফিক কন্ট্রোল আইনের অপব্যবহারের কারণে ট্রাফিক জ্যাম দায়ী, কঠোর হতো যদি ট্রাফিক কন্ট্রোল আইন মানা হয় তাহলে ট্রাফিক জ্যাম কমে যাবে। আমরা বাঙালী একটু আরাম প্রিয়ও বটে, আমাদের ফুটওভার ব্রিজ গুলো অপব্যবহার হচ্ছে শুধুমাত্র সচেতনতার অভাবে। যাইহোক সরকার যদি ফুটওভার ব্রীজ গুলোর উপর ছাউনি দিয়ে ক্যাপসুল লিফ্ট দিয়ে বানিয়ে দিতো তাহলে তার ব্যবহার ১০০% নিশ্চিত হতো। কারণ আমরা অনেকেই আইনের তুয়াক্কা না করেই ফুটওভার ব্রীজ থাকার পরও নীচ দিয়ে জ্যাম লাগিয়ে হেঁটে যেতে অভ্যস্ত, তা প্রতিরোধ করার একটাই উপায় তা হলো ছাউনি দিয়ে ক্যাপসুল লিফ্ট এর মতো করে দিলেই সবাই তা ব্যবহার করতো বা বাধ্য হতো।
গুরুত্বপূর্ণ আরেকটি ট্রাফিক জ্যামের কারণ হলো আমাদের চৌরাস্তা গুলো, ট্রাফিক জ্যামমুক্ত করতে হলে আমাদের রাস্তা গুলোর প্রতিটা চৌরাস্তায় অবশ্যই ফ্লাইওভার করতে হবে কারণ আমাদের ট্রাফিক জ্যামের একমাত্র কারণ অতিরিক্ত চৌরাস্তা, সবগুলো বড় বড় চৌরাস্তায় ফ্লাইওভার দিয়ে দিলেই গাড়ী আর থামানোর প্রয়োজন হবে না, আমি মনেকরি ট্রাফিক জ্যামের জন্য অতিরিক্ত চৌরাস্তা গুলো দায়ী। চৌরাস্তা গুলোতে ফ্লাইওভার হয়ে গেলে ট্রাফিক জ্যাম একেবারে কমে যাবে। ঢাকা শহরে এলোমেলো ভাবে ব্রিটিশ আমলের ট্রেন ক্রসগুলো পড়ে আছে সম্ভব হলে ট্রেন ক্রসগুলো বিকল্পপথে স্থানান্তর করে নিতে হবে অথবা ঢাকা শহরের ভেতরে অতিরিক্ত ট্রেন ক্রসগুলো যত সম্ভব কমিয়ে ফেলতে হবে। ট্রেন ষ্টেশন প্রয়োজনে শহরের বাইরে স্থাপন করা যেতে পারে। রাস্তায় ছোট ছোট পুরোনো বাস গুলো জ্যামের আরেকটি কারণ। রাস্তয় এখন বি. আর. টি. সি. এ/সি, ননএ/সি বাস পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে। বি. আর. টি. সি. হচ্ছে জনগণের সম্পদ, এটি আমাদের জনগণের বাস, আমরা যদি বি. আর. টি. সি. ব্যবহার করি তাহলেও জ্যাম কমে যাবে, একটা বি. আর. টি. সি. বাসে মোট সীট থাকে ৫২টা, ছোট ছোট গাড়ী গুলো কমিয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে বি. আর. টি. সি. বাসের ব্যবহার বাড়িয়ে দিলে রাস্তায় বাসের চাপ কমে আসবে। অন্যদিকে ঢাকা শহরে দিন দিন জনসংখ্যার চাপ বেড়েই চলছে, ফলে অতিরিক্ত গাড়ীর চাপও বাড়ছে। মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় সকল কর্মের কর্মস্থল শুধু ঢাকা কেন্দ্রীক হচ্ছে যার ফলে দিন দিন ঢাকা শহরে মাথা গোঁজার ঠাঁইও হ্রাস পাচ্ছে। ঢাকা শহরের চাপ কমাতে চাইলে প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ অত্যাবশ্যকীয় হয়ে পড়েছে। প্রশাসনিক কেন্দ্রস্থল গুলো নিকটবর্তী শহর যেমন- নারায়নগঞ্জ, গাজীপুর অথবা মুন্সীগঞ্জের মতো শহরে স্থানান্তর করে ফেললেই ঢাকা শহরের জনসংখ্যার চাপ অনেকটা কমে যাবে আর তা এখন সময়ের দাবী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। নইলে যেভাবে জনসংখ্যার চাপ বাড়ছে তাতে করে ট্রাফিক সমস্যার মতো এত বড় সমস্যা ভবিষ্যতে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।
ইদানিং ঢাকা শহরে গ্যাস পাম্প গুলোতে গাড়ীর লাইনে মূল রাস্তা দখলে থাকে বিধায় ট্রাফিক জ্যামের সৃষ্টি হয়। ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা গ্যাস পাম্পগুলো এখন জনগণের মাথা ব্যাথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিছু সময় গ্যাস পাম্প বন্ধ থাকায় এই অতিরিক্ত চাপের সৃষ্টি হয়, ভবিষ্যতে নগরবাসীর কথা চিন্তা করে পরিকল্পনা মাফিক পাম্প স্থাপনের অনুরোধ করছি নতুবা ব্যাঁঙের ছাতার মতো এইভাবে চাপ সৃষ্টি হলে একসময় ঢাকা শহর অপরিকল্পিত নগরী হিসাবে বিশ্বে ১ম স্থান অধিকার করবে। ফুটপাতগুলো অপব্যবহার হচ্ছে প্রতিদিন। ফুটপাত যদি ব্যবহার নাই করতে হয় তাহলে ফুটপাত রেখে লাভ কি? এক বারে ফুটপাত উঠিয়ে দিলেই চলে, আর যদি ফুটপাত রাখতে হয় তাহলে অপব্যবহার রোধ করে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হবে। আইন যদি সঠিকভাবে প্রয়োগ না করা হয় তাহলে এতো বড় বড় কথা বলে লাভ কি? ফুটপাত যারা দখল করে আছে তাদেরকে কারা মত দিচ্ছে? তারা কি সরকারের চেয়েও শক্তিশালী? দেশের প্রয়োজনে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সঠিক আইন প্রয়োগের মাধ্যমে জনমত গঠন করে ফুটপাত থেকে সকল অবৈধ দখলদারদের উঠিয়ে দিয়ে ব্যবহার উপযোগী করে দিতে হবে। এই দেশে অনেক বিদেশী পর্যটক আসে, অনেক আন্তর্জাতিক মানের অনুষ্ঠান হয়, কিন্তু তারা যখন আমাদের এই শহরের রাস্তায় চলাচল করে তখন ফুটপাতের অপব্যবহার আমাদেরকে রীতিমত লজ্জায় ফেলে দেয়। অপরিষ্কার, অপরিকল্পিত, বে-দখলীয় রা¯তাই হচ্ছে আমাদের লজ্জার কারণ। সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই লজ্জার হাত থেকে দেশকে মুক্ত করতে হবে।
ঢাকা শহরে ট্রাফিক জ্যাম কমানোর জন্য সি সি ক্যামেরাই শ্রেষ্ঠ পন্থা, প্রয়োজনে জনগন জ্যাম পরিস্থিতি দেখার জন্য ব্যবস্থা রাখতে হবে তাহলে এই দেশে আই,টি ব্যবস্থা তথা সার্বিক বিষয়ে দেশ আরো উন্নত হবে, আমরা জনগন জ্যামের মত মহামারি থেকে চিরতরে পরিত্রান পাবো।ট্রাফিক কন্ট্রোল আইন ব্যবহার বাড়ানোর জন্য সাথে সাথে আই,টি প্রক্রিয়ায় জরিমানা আদায়ের ব্যবস্থা করতে হবে, এক লেইন ব্যবহার করতে হবে, মোড় কমিয়ে দিয়ে আধুনিক ইউ মোড় তৈরি করে গাড়ী চালাতে হবে, র্সবোপরি গন সচতেনতা বাড়িয়ে দিতে হবে, ফুটপাত দিয়ে হাটার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে তাহলে সকাল বেলা আমাদের র্পাকে যাওয়া লাগবে না, রাস্তায় এক লেইনকে সাইকেল অথবা মোটর সাইকেলের চলার জন্য ব্যবস্থা রাখতে হবে, সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে চেষ্টা করলে আশা করি দেশ উপকৃত হবে এবং সময় সঞ্চয়ের একটা ব্যবস্থা হবে।
আমি প্রথমেই বলেছি আমি একজন ক্ষুদ্র চিন্তার মানুষ, আমার এই ক্ষুদ্র চিন্তা যদি রাষ্ট্রের কোন সামান্যতম উপকার হয় তাহলে দেশ সেবায় নিজেকে সামান্যতম অংশ গ্রহণ করাতে পেরেছি বলে সান্তনা পাবো। কষ্টার্জিত এই দেশে অনেক সফলতা রয়েছে, এ যাবৎকাল আমরা যত টুকু উপরে উঠতে পেরেছি অর্থাৎ উন্নয়নের মুখ দেখেছি তা যেন ধরে রাখতে পারি। মেট্রো রেল চালু সহ রাস্তায় রিক্সা উঠিয়ে চিরতরে ঢাকা শহর রিক্সা মুক্ত করলে এটি একটি উন্নত সিটি হিসেবে বিশ্বের কাছে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে, প্রতিটা রিক্সার ড্রাইভারকে যদি বিকল্প আয়ের উৎস সৃষ্টি করে রিক্সা উঠিয়ে দেওয়া যেতো তাহলে বিভিন্ন শহর থেকে ট্রাফিক জ্যাম কমে যেত , আমাদের দেশে অনেক ব্যাংক রয়েছে এবং ব্যাংক গুলোর অনেক ক্ষুদ্র ঋণের ব্যবস্থা রয়েছে প্রতিটা রিক্সার ড্রাইভারকে ক্ষুদ্র ঋণের ব্যবস্থা করে দিলে এবং মাসিক কিস্তির মাধ্যমে পরিশোধের ব্যবস্থা করে দিলে প্রতিটা রিক্সার ড্রাইভার থেকে সি,এন, জির মালিক হিসেবে দারিদ্রতার হাত থেকে মুক্ত হতো। আমরা সময়ের কাজ সময়ে করতে ভালবাসি এবং সকলে আমরা দল মতের উর্ধ্বে উঠে দেশের স্বার্থে সর্বদা প্রতিটা সরকারের ভালোকে ভালো বলব এবং খারাপকে খারাপ বলে চিহ্নিত করব তাতে যদি আমাদের পিতা, ভাই অথবা সন্তনাও অপরাধী হয় তাকেও খারাপ হিসেবে চিহ্নিত করতে পিছপা হবো না। আমরা সকলে দেশকে ভালবাসি, দেশের মাটি ও মানুষকে ভালবাসি, আমাদের দ্বারা যতটুকু সম্ভব দেশের জন্য ভালো কিছু করার চেষ্টা করব এবং মৃত্যুর আগপর্যন্ত আমরা যতটুকু পারি করে যাবো বাকীটা আমাদের সন্তান করবে এটাই হোক আমাদের ব্রত, আসুন স্বপ্নের এই দেশটাকে স্বপ্নের মতো করে গড়ে তুলি, আশা মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে, ঢাকা শহর একদিন ট্রাফিক জ্যাম মুক্ত হবে এটাই আমাদের সকলের আশা এবং স্বপ্ন, আর এই স্বপ্ন একদিন বাস্তবে রূপ নিবে এটাই আমার মতো সকল নাগরিকের রাষ্ট্রের কাছে প্রত্যাশা, আর সেই প্রত্যাশা একদিন পূরণ হবেই। পরিশেষে বলব, অনেকে বলেন, “কয়লা ধুইলে ময়লা যায় না” আর আমি বলি “কয়লা ধুইলে ময়লা যায় কিন্তু সাদা হয় না” কয়লার রংতো কলোই থাকে আর তা ধূইলে ময়লা যাবেই অথবা যেতে বাধ্য। বাংলাদেশের ময়লা আমরা সকলে দলমতের উর্ধ্বে উঠে দূর করব্ আর তার জন্য শুধু প্রয়োজন সচেতনতা আর ইতিবাচক চিন্তা, তবেই আমার দেশ ইতিবাচক মানসিকতায় উন্নত চিন্তায় বিশ্বে নিজের নাম লিখাতে সক্ষম হবে।
অসির চেয়ে মসি বড়,ব্যাক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়,ঐক্য শিক্ষা শান্তি প্রগতি এবং একবিংশ শতাব্দীর একমাত্র চ্যালেঞ্জ আই টি খাতকে বিশ্বে এক নম্বর জাতি হিসেবে অর্থনৈতিক মুক্তি আনয়ন এবং নতুন প্রজন্মের শ্লোগান আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি, সর্বদা বাংলার জিন্দাবাদ, প্রতিটা ঘরে ঘরে বাংলার বাঘ তৈরি করে গনতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায় ইতিবাচক চিন্তায় গনতন্ত্র আরো শক্তিশালী হউক ইহাই আমাদের অংগীকার।লালকে লাল এবং সবুজকে সবুজ বলবই এবং যারা বলবেন না তাদের বলতে হবে, মনে রাখবেন “আমরা বাংলার বাঘ, আমরা বলবই ইনশাল্লাহ্।ভালোরা এগিয়ে যাবে এবং অন্যরা ভালোদেরকে অনুসরন করতে বাধ্য। শুভ প্রত্যয়।
লেখক:
মোহাম্মদ রেজাউল করিম
এডভোকেট
বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট
মোবাইল: ০০৮৮-০১৫৫৭৭৯১৪৪১
ই-মেইল:r_k_reza@hotmail.com
ফেইসবুক : Mohammed Rezaul Karim
লিখিত : ২৮/২০/২০১১ ইংরেজি
হালনাগাদ : ০১/০৯/২০২১ ইংরেজি